দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম বাংলাদেশ

 

দাউদ এক ধরনের ছত্রাকজনিত চর্মরোগ যা ত্বকের উপর গোল দাগ আকারে দেখা যায় যারা দীর্ঘসময় গরমে বা ঘামে ভেজা থাকে তাদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা না মানলে দাউদের সংক্রমণ হতে পারে দাউদে আক্রান্ত ব্যক্তির তোয়ালে কাপড় বা চিরুনি ব্যবহার করলেও এটি ছড়ায় একই
 কাপড় বারবার না ধুয়ে পরলে ত্বকে ছত্রাক জন্মাতে পারে যেসব জায়গা ঘেমে থাকে যেমন পিঠ বা বুক সেখানে দাউদ বেশি হয় অতিরিক্ত চুলকানি জ্বালা ও লালচে দাগ এর সাধারণ লক্ষণ ঠিকমতো চিকিৎসা না নিলে এটা ধীরে ধীরে শরীরের আরও জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম বা ওষুধ নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি সহজে ভালো হয়ে যায় সবচেয়ে জরুরি হলো: নিজের জিনিসপত্র অন্য কাউকে না দেওয়া এবং নিয়মিত পরিষ্কার থাকা 

পেজ সুচিপত্রঃ  এই সাতটি মলম ব্যবহার করুন

ক্লোট্রিমাজল মলমের ব্যবহার ও উপকারিতা

কিছু মানুষের ত্বকে এটি ব্যবহার করলে চুলকানি বা জ্বালাপোড়া অনুভব হতে পারে আবার ক্লোট্রিমাজল ব্যবহারে ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে বা সামান্য ফোলাভাব দেখা দিতে পারে এবং আর কখনো কখনো ত্বকে শুষ্কতা বা খসখসে ভাব তৈরি হতে পারে অতিরিক্ত ব্যবহারে ত্বকে এলার্জি বা র‍্যাশ।
দেখা দিতে পারে মুখ, চোখ বা শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় লাগলে জ্বালাপোড়া বাড়তে পারে দীর্ঘ সময় লাগালে সংবেদনশীল ত্বকে ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া হতে পারে অন্য ওষুধ বা মলমের সঙ্গে রিঅ্যাকশন করলে ত্বকে সমস্যা তৈরি করতে পারে এই ধরনের সমস্যা হলে তৎক্ষণাৎ ব্যবহার বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

আরোপড়ুনঃ কি খেলে মাথার ব্রেন ভালো থাকে

কেটোকোনাজল মলমের ব্যবহার ও উপকারিতা

কেটোকোনাজল একটি ছত্রাকনাশক মলম যা ত্বকের ফাঙ্গাল ইনফেকশন সারাতে ব্যবহার করা হয় এটি দাউদ, দাদ, চুলকানি, ছুলি ও রিঙওয়ার্ম জাতীয় সংক্রমণে কার্যকর ত্বকে ছত্রাকের বৃদ্ধি বন্ধ করে, চুলকানি ও জ্বালাপোড়া দ্রুত কমিয়ে দেয় মলমটি দিনে ১-২ বার আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হয়, সাধারণত ২
থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত সঠিকভাবে ব্যবহার করলে কয়েকদিনের মধ্যেই দাগ ও চুলকানি হালকা হতে শুরু করে এটি সহজলভ্য ও তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী একটি অ্যান্টিফাংগাল ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহারে দ্রুত উপকার পাওয়া যায় এবং সংক্রমণ ফিরে আসার ঝুঁকিও কমে তবে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাও এর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করবে। উপরের মলমের নাম আর এই মলমের নাম প্রায় একই কিন্তু মলম ভিন্ন

টারবিনাফিন মলমের ব্যবহার ও উপকারিতা

টারবিন মলম একটি অ্যান্টিফাংগাল ওষুধ, যা ছত্রাকজনিত চর্মরোগে ব্যবহৃত হয় এটি দাউদ, দাদ, ছুলি, অ্যাথলেট’স ফুটসহ বিভিন্ন ফাঙ্গাল ইনফেকশনে কার্যকর মলমটি ত্বকে ছত্রাকের কোষ ধ্বংস করে সংক্রমণ সারিয়ে তোলে চুলকানি, লালচে দাগ এবং জ্বালাপোড়া কমাতে দ্রুত কাজ করে সাধারণত দিনে একবার আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করতে হয় ব্যবহার শুরুর কয়েক দিনের মধ্যে উপসর্গ হালকা হয়ে আসে টারবিন মলম ত্বকে সহজে মিশে যায় এবং ত্বক শুকনো রাখে এটি ছত্রাকের পুনরায় বৃদ্ধি রোধে সাহায্য

করে পায়ে কুঁচকিতে বা আঙুলের ফাঁকে সংক্রমণে ভালো ফল দেয় এই মলম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তুলনামূলকভাবে খুবই কম ত্বকে জ্বালাপোড়া বা লালভাব কমে গেলে ব্যবহার বন্ধ না করাই ভালো মলম লাগানোর আগে আক্রান্ত স্থান পরিষ্কার ও শুকনো রাখতে হয় ব্যবহারকালে রোগ প্রতিরোধে পরিষ্কার কাপড় পরা জরুরি ফাঙ্গাল সংক্রমণের পুনরাবৃত্তি রোধে পুরো কোর্স ব্যবহার জরুরি অতিরিক্ত ব্যবহার না করে নির্দিষ্ট মাত্রায় লাগানো উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করলে আরও নিরাপদ ও কার্যকর হয়।   

আরোপড়ুনঃ সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের ১০টি উপায়

ড্যাকটারিন বা মাইকোনাজল মলমের ব্যবহার ও উপকারিতা

ড্যাকটারিন মলমে সক্রিয় উপাদান হলো মাইকোনাজল, যা একধরনের অ্যান্টিফাংগাল ওষুধ এটি ছত্রাকজনিত ত্বকের সংক্রমণ যেমন দাউদ সারাতে ব্যবহৃত হয় মলমটি ছত্রাকের কোষপ্রাচীর ধ্বংস করে সংক্রমণ রোধ করে চুলকানি জ্বালাপোড়া এবং ত্বকের লালচে দাগ দ্রুত কমায় সাধারণত দিনে ১-২ বার আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করা হয় ব্যবহারের কিছু দিনের মধ্যেই উপসর্গ হালকা হয়ে যায় গোপনাঙ্গ কুঁচকি বা আঙুলের ফাঁকের সংক্রমণেও এটি কার্যকর মলমটি ত্বকে ভালোভাবে মিশে গিয়ে দীর্ঘ সময়
কাজ করে মাইকোনাজল ছত্রাকের পাশাপাশি কিছু ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণেও কাজ করে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের ক্ষেত্রেই এটি নিরাপদভাবে ব্যবহারযোগ্য সঠিক নিয়মেব্যবহার করলে সংক্রমণ পুরোপুরি সেরে যায় ব্যবহারের সময় সংক্রমিত স্থান পরিষ্কারও শুকনো রাখা উচিতব্যবহারকালে আক্রান্ত স্থান ঢেকে না রেখে খোলা রাখা ভালোওষুধটি ব্যবহার শেষে হাত ধুয়ে ফেলা প্রয়োজন সংক্রমণ আবার না ফিরে আসে, সেজন্যনির্ধারিত সময় পর্যন্ত ব্যবহার চালিয়ে যেতে হয় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ উপকার পাওয়া যায়।

লুলিবেট বা লুলিকোনাজল মলমের ব্যবহার ও উপকারিতা

লুলিকোনাজল মলম একটি আধুনিক অ্যান্টিফাংগাল ওষুধ এটি প্রধানত দাউদ দাদ ছুলি ও ছত্রাকজনিত ত্বকের সংক্রমণে ব্যবহৃত হয় মলমটি ত্বকে ছত্রাকের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরি হওয়া বন্ধ
করে এটি সংক্রমণযুক্ত ত্বকে দ্রুত কাজ করে এবং উপশম এনে দেয় সাধারণত দিনে একবার আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করলেই যথেষ্ট হয় ব্যবহারের ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে লক্ষণ অনেকটাই কমে আসে এই মলমটি দীর্ঘস্থায়ী ফাঙ্গাল সংক্রমণেও কার্যকর ফল দেয় চুলকানি ত্বকের লালচে ভাব এবং জ্বালাপোড়া কমাতে এটি কার্যকর লুলিকোনাজল সহজে ত্বকে শোষিত হয় এবং ত্বক শুকনোরাখে
আবহাওয়াজনিত ঘাম বা আর্দ্রতা থেকে হওয়া সংক্রমণেও এটি ভালো কাজ করে ব্যবহারের সময় ত্বক পরিষ্কার ও সম্পূর্ণ শুকনো রাখা জরুরি মলম লাগানোর পর আক্রান্ত স্থানে কোনো কাপড় বা ব্যান্ডেজ না দেওয়াই ভালো সংক্রমণের পুরোপুরি নিরাময়ের জন্য ওষুধটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ব্যবহার করা উচিত ব্যবহারের পর হাত ধুয়ে ফেলতে হয় যাতে অন্য জায়গায় সংক্রমণ না ছড়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করলে এর কার্যকারিতা আরও বাড়ে এটি.তুলনামূলকভাবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম এমন একটি নিরাপদ মলম।

ইবারনেট বা ইবারকোনাজল মলমের ব্যবহার ও উপকারিতা

ইবারনেট মলমে সক্রিয় উপাদান হলো ইবারকোনাজল এটি ছত্রাকজনিত চর্মরোগ যেমন দাউদ দাদ ছুলি সারাতে ব্যবহৃত হয় এই মলম ছত্রাকের কোষের দেয়াল ধ্বংস করে সংক্রমণ বন্ধ করে এটি ত্বকের চুলকানি লালভাব ও জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে সাধারণত দিনে একবার আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করলেই যথেষ্ট হয় ব্যবহার শুরুর কয়েক দিন
দীর্ঘস্থায়ী ফাঙ্গাল সংক্রমণেও ইবারনেট ভালোভাবে কাজ করে এটি সহজে ত্বকে মিশে যায় এবং ত্বককে শুষ্ক রাখে মলমটি আক্রান্ত স্থানে গভীরভাবে প্রবেশ করে কাজ করে গরমে ঘামে সংক্রমণজনিত চর্মরোগে এটি খুব কার্যকর ব্যবহারের সময় ত্বক পরিষ্কার ও শুকনো রাখা জরুরি মলম লাগানোর আগে ও পরে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হয় একই এলাকায় বারবার সংক্রমণ হলে নিয়মিত ব্যবহার করতে হয় ব্যবহারের সময় সুতির জামা কাপড় পরা ভালো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তুলনামূলকভাবে কম এবং নিরাপদ চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।

সার্টাফেন বা সার্টাকোনাজল মলমের ব্যবহার ও উপকারিতা

সার্টাফেন একটি অ্যান্টিফাংগাল মলম যার মূল উপাদান সার্টাকোনাজল এটি দাউদ দাদ ছুলি ও অন্যান্য ছত্রাকজনিত ত্বকের সংক্রমণে ব্যবহৃত হয় মলমটি ছত্রাকের কোষপ্রাচীর ভেঙে তাদের বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয় চুলকানি ত্বকের র‍্যাশ এবং জ্বালাপোড়ার উপশমে এটি দ্রুত কাজ করে সাধারণত দিনে একবার ব্যবহারেই ভালো ফল পাওয়া যায় প্রথম কয়েক দিনের মধ্যেই উপসর্গ অনেকটা হালকা হয়ে যায়
এটিদীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণেও কার্যকর ভূমিকা রাখে ত্বকে সহজে মিশে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে আক্রান্ত স্থানে গভীরভাবে প্রবেশ করে সংক্রমণ সারাতে সাহায্য করেব্যবহারের সময় জায়গাটি পরিষ্কার ও শুকনো রাখা প্রয়োজন ঘামের কারণে হওয়া 

আরোপড়ুনঃ কি খেলে মাথার ব্রেন ভালো থাকে

 ছত্রাক সংক্রমণেও এটি উপকারী ব্যবহারের সময় পাতলা করে মলম লাগাতে হয় হাত দিয়ে লাগানোর পর হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হয় সার্টাফেন সংক্রমণের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সাহায্য করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই কম এবং সাধারণত নিরাপদ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

শেষ কথাঃ দাউদের ভালো মলম বাংলাদেশ

যে সাতটি মলমের কথা বলা হলো  এই সাতটি মলম আপনি প্রতিনিয়ত ব্যাবহার করবেন  আপনার দাউদ ভালো হয়ে যাবে  এবং কন্টিনিউ ব্যাবহার করতে থাকবেন তাহলে দেখবেন ভালো একটা রেজাল্ট পাবেন।

লেখকের মন্তব্য

আমি ডাক্তার নই তবে আমি একজন আর্টিকেল রাইটার হিসেবে আপনাদেরএই সাতটি মলম বা ক্রিম সাজেস্ট করি  আপনার শরীর ভালো রাখার জন্য তো আমার এই পোস্ট দেখে যদি আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে আপনার ফ্রেন্ডদের মাঝে শেয়ার করুন এবং তাদের ও সুস্থতা কামনা করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্রো উইথ কাউছারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url